3:07 pm, Friday, 14 November 2025

মিরপুরে ফিরেই রিশাদের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশের বড় জয়

বাংলাদেশের বোর্ডে পুঁজি বেশি ছিল না, ২০৭ রানের। তবে মিরপুরের ঘূর্ণি পিচে এই রান তাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য কঠিন হতে পারে, আন্দাজ করা যাচ্ছিল। রিশাদ হোসেন ক্যারিবীয়দের নাকানি চুবানি খাইয়েই ছাড়লেন। একাই নিলেন ৬ উইকেট।

২০৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৯ ওভারে ১৩৩ রানে গুটিয়ে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরপুরে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পেলো ৭৪ রানের জয়।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ব্রেন্ডন কিং আর অলিক আথানাজে তোলেন ৫১ রান। অবশেষে ১২তম ওভারে রিশাদ হোসেন এলবিডব্লিউ করেন আথানাজেকে (২৭)।

ক্রিজে এসে ধরে খেলতে থাকেন কিয়েসি কার্টি। যদিও কাজ হয়নি। রিশাদের ঘূর্ণিতে স্লিপে সাইফ হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৩০ বল খেলে করেন ৯ রান।

এরপর ইনিংসের ২২তম ওভারে জোড়া শিকার করেন রিশাদ। সেট ব্যাটার ব্রেন্ডন কিং ৬৬ বলে ৪৪ আর শেরফান রাদারফোর্ড শূন্য করেই হন উইকেটরক্ষক সোহানের দারুণ দুটি ক্যাচ। ১ উইকেটে ৭৯ থেকে ৪ উইকেটে ৮২ রানে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ ৩ রানের মধ্যে হারায় ৩ উইকেট।

রিশাদ তার পঞ্চম শিকার বানান রস্টন চেজকে (৬)। যে কোনো ফরম্যাটের ক্যারিয়ারে এটিই তার প্রথম ফাইফার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ষষ্ঠ উইকেটটি নেন মিরাজ। গুদাকেশ মোতিকে (৩) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১০০ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ক্যারিবীয়রা। এরপর শেষ ভরসা শাই হোপকেও (১৫) তুলে নেন তানভীর।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। ৩৯ ওভারে ১৩৩ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।

রিশাদ হোসেন ৩৫ রান দিয়ে শিকার করেন ৬ উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ২টি, মেহেদী মিরাজ ও তানভীর ইসলাম নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে প্রায় ৫০ ওভার খেলেও বলার মতো পুঁজি গড়তে পারেনি না বাংলাদেশ। একটা সময় তো দুইশর নিচেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। শেষদিকে রিশাদ হোসেন আর তানভীর ইসলামের ব্যাটে কোনোমতে সে শঙ্কা কেটেছে। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৪ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

মিরপুরে টস হেরে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ধুঁকতে থাকে স্বাগতিক দল। তানজিদ হাসান তামিমকে বাদ দিয়ে ওপেনিংয়ে ফেরানো হয় সৌম্য সরকারকে। সঙ্গে ছিলেন সাইফ হাসান।

দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই সাইফ হাসানকে এলবিডব্লিউ করেন রোমারিও শেফার্ডকে। এলবিডব্লিউটা এতটাই স্পষ্ট ছিল যে, সাইফ হাসান রিভিউ নেওয়ার সাহস করেননি। ৩ রানে বিদায় নেন তিনি।

এরপরের ওভারের প্রথম বলেই জেডেন সিলসকে কভার পয়েন্ট এরিয়া দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য সরকার। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে ৪ রানেই সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।

তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর তাওহিদ হৃদয়। যদিও জুটিটি ছিল ধীরগতির। ১২০ বল খেলে ৭১ রান যোগ করেন তারা। শান্তর এলবিডব্লিউয়ে ভাঙে এই জুটি। খারে পিয়েরির বলে ফেরার আগে শান্ত করেন ৬৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩২।

এরপর দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে নেন হৃদয়। তবে মিরপুরের ধীরগতির পিচে তার হাফসেঞ্চুরি করতে লেগেছে ৮৭ বল! তবে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটির পর বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি। ৫১ রানেই সাজঘরে ফিরেছেন হৃদয়।

জাস্টিন গ্রেভসের অনেকটা বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়েছেন হৃদয়। ৯০ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ৩টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।

পঞ্চম উইকেটে অঙ্কন আর মেহেদী হাসান মিরাজ যোগ করেন ৫৫ বলে ৪৩ রান। রস্টন চেজের স্পিনে মিরাজ ছক্কা হাঁকাতে গেলে ভাঙে এই জুটি। ২৭ বলে ১৭ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এরপর নিজের ভুলে ফিফটি মিস করেন অভিষিক্ত অঙ্কন। চেজকে হাঁটু গেড়ে বড় শট মারতে গিয়ে মিস করেন, হন বোল্ড। ৭৬ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে ৩টি চার মারেন অঙ্কন। ১৬৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

নুরুল হাসান সোহান করেন ১০ বলে ৯। রিশাদ হোসেন ১২ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ২৬ রানের ক্যামিও উপহার দিয়ে দলকে দুইশর কাছাকাছি নিয়ে যান। ৪ বলে ১ ছক্কায় ৯ করেন তানভীর ইসলাম।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডেন সিলস ৩টি এবং রস্টন চেজ ও জাস্টিন গ্রেভস নেন ২টি করে উইকেট।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ

মিরপুরে ফিরেই রিশাদের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশের বড় জয়

Update Time : 10:30:07 pm, Saturday, 18 October 2025

বাংলাদেশের বোর্ডে পুঁজি বেশি ছিল না, ২০৭ রানের। তবে মিরপুরের ঘূর্ণি পিচে এই রান তাড়াও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য কঠিন হতে পারে, আন্দাজ করা যাচ্ছিল। রিশাদ হোসেন ক্যারিবীয়দের নাকানি চুবানি খাইয়েই ছাড়লেন। একাই নিলেন ৬ উইকেট।

২০৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩৯ ওভারে ১৩৩ রানে গুটিয়ে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরপুরে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পেলো ৭৪ রানের জয়।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ব্রেন্ডন কিং আর অলিক আথানাজে তোলেন ৫১ রান। অবশেষে ১২তম ওভারে রিশাদ হোসেন এলবিডব্লিউ করেন আথানাজেকে (২৭)।

ক্রিজে এসে ধরে খেলতে থাকেন কিয়েসি কার্টি। যদিও কাজ হয়নি। রিশাদের ঘূর্ণিতে স্লিপে সাইফ হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে। ৩০ বল খেলে করেন ৯ রান।

এরপর ইনিংসের ২২তম ওভারে জোড়া শিকার করেন রিশাদ। সেট ব্যাটার ব্রেন্ডন কিং ৬৬ বলে ৪৪ আর শেরফান রাদারফোর্ড শূন্য করেই হন উইকেটরক্ষক সোহানের দারুণ দুটি ক্যাচ। ১ উইকেটে ৭৯ থেকে ৪ উইকেটে ৮২ রানে পরিণত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ ৩ রানের মধ্যে হারায় ৩ উইকেট।

রিশাদ তার পঞ্চম শিকার বানান রস্টন চেজকে (৬)। যে কোনো ফরম্যাটের ক্যারিয়ারে এটিই তার প্রথম ফাইফার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ষষ্ঠ উইকেটটি নেন মিরাজ। গুদাকেশ মোতিকে (৩) এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১০০ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ক্যারিবীয়রা। এরপর শেষ ভরসা শাই হোপকেও (১৫) তুলে নেন তানভীর।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। ৩৯ ওভারে ১৩৩ রানে থামে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।

রিশাদ হোসেন ৩৫ রান দিয়ে শিকার করেন ৬ উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ২টি, মেহেদী মিরাজ ও তানভীর ইসলাম নেন একটি করে উইকেট।

এর আগে প্রায় ৫০ ওভার খেলেও বলার মতো পুঁজি গড়তে পারেনি না বাংলাদেশ। একটা সময় তো দুইশর নিচেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। শেষদিকে রিশাদ হোসেন আর তানভীর ইসলামের ব্যাটে কোনোমতে সে শঙ্কা কেটেছে। শেষ পর্যন্ত ৪৯.৪ ওভারে ২০৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

মিরপুরে টস হেরে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই ধুঁকতে থাকে স্বাগতিক দল। তানজিদ হাসান তামিমকে বাদ দিয়ে ওপেনিংয়ে ফেরানো হয় সৌম্য সরকারকে। সঙ্গে ছিলেন সাইফ হাসান।

দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলেই সাইফ হাসানকে এলবিডব্লিউ করেন রোমারিও শেফার্ডকে। এলবিডব্লিউটা এতটাই স্পষ্ট ছিল যে, সাইফ হাসান রিভিউ নেওয়ার সাহস করেননি। ৩ রানে বিদায় নেন তিনি।

এরপরের ওভারের প্রথম বলেই জেডেন সিলসকে কভার পয়েন্ট এরিয়া দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য সরকার। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে ৪ রানেই সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।

তৃতীয় উইকেটে হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর তাওহিদ হৃদয়। যদিও জুটিটি ছিল ধীরগতির। ১২০ বল খেলে ৭১ রান যোগ করেন তারা। শান্তর এলবিডব্লিউয়ে ভাঙে এই জুটি। খারে পিয়েরির বলে ফেরার আগে শান্ত করেন ৬৩ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩২।

এরপর দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে নেন হৃদয়। তবে মিরপুরের ধীরগতির পিচে তার হাফসেঞ্চুরি করতে লেগেছে ৮৭ বল! তবে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটির পর বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি। ৫১ রানেই সাজঘরে ফিরেছেন হৃদয়।

জাস্টিন গ্রেভসের অনেকটা বাইরের বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়েছেন হৃদয়। ৯০ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ৩টি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।

পঞ্চম উইকেটে অঙ্কন আর মেহেদী হাসান মিরাজ যোগ করেন ৫৫ বলে ৪৩ রান। রস্টন চেজের স্পিনে মিরাজ ছক্কা হাঁকাতে গেলে ভাঙে এই জুটি। ২৭ বলে ১৭ করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এরপর নিজের ভুলে ফিফটি মিস করেন অভিষিক্ত অঙ্কন। চেজকে হাঁটু গেড়ে বড় শট মারতে গিয়ে মিস করেন, হন বোল্ড। ৭৬ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে ৩টি চার মারেন অঙ্কন। ১৬৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

নুরুল হাসান সোহান করেন ১০ বলে ৯। রিশাদ হোসেন ১২ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ২৬ রানের ক্যামিও উপহার দিয়ে দলকে দুইশর কাছাকাছি নিয়ে যান। ৪ বলে ১ ছক্কায় ৯ করেন তানভীর ইসলাম।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেডেন সিলস ৩টি এবং রস্টন চেজ ও জাস্টিন গ্রেভস নেন ২টি করে উইকেট।