4:07 am, Wednesday, 12 November 2025

মরিচের কেজি ৩৫০, সবজির দামে আগুন

  • Reporter Name
  • Update Time : 12:50:42 pm, Friday, 3 October 2025
  • 52 Time View

বিশ্বাসের প্রতিধ্বনি নিউজ ডেস্কঃ টানা বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বাজারে সব ধরনের সবজির দাম হু হু করে বেড়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়শ, বরবটি— সব ধরনের সবজির দামই এখন চড়া।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর শান্তিনগর,বাসাবো, খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, নিউমার্কেট, কাওরান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজি এখন খুচরা দরে নাগালের বাইরে। করলা কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, বেগুন ১২০ থেকে ২০০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটোল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঝিঙা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ও শিম ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শীতের আগাম সবজি বাজারে এলেও দাম রীতিমতো আকাশছোঁয়া। ছোট একটি ফুলকপি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শিম ২০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খেত নষ্ট হয়েছে, যার ফলে সরবরাহ কমে গেছে। পাশাপাশি দুর্গাপূজার ছুটিতে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি বন্ধ থাকায় এর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, সবজির তেমন ঘাটতি নেই, কিন্তু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

রাজধানীর রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘করলার কেজি ১৬০ টাকা! আগে মাছ-মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি, এখন সবজি কিনতেও হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে।’

সবজির পাশাপাশি ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেল এখন লিটারে ১৭২ থেকে ১৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৬ টাকা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ সংকট দেখিয়ে কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াচ্ছে।

অন্যদিকে মাছ ও মুরগির দামও ক্রেতাদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। মাঝারি রুই ও কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২১০০ থেকে ২৩০০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

খোলা আটা, দেশি ডাল ও মসলার দামও কমেনি। আটা কেজিতে ৫০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সব মিলিয়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার বাজারে কঠোর নজরদারি না বাড়ালে সামনে আরও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যত মামলা আছে তুলে নেওয়া হবেঃ মির্জা ফখরুল

মরিচের কেজি ৩৫০, সবজির দামে আগুন

Update Time : 12:50:42 pm, Friday, 3 October 2025

বিশ্বাসের প্রতিধ্বনি নিউজ ডেস্কঃ টানা বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বাজারে সব ধরনের সবজির দাম হু হু করে বেড়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা, বেগুন, পটোল, ঢেঁড়শ, বরবটি— সব ধরনের সবজির দামই এখন চড়া।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর শান্তিনগর,বাসাবো, খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, নিউমার্কেট, কাওরান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজি এখন খুচরা দরে নাগালের বাইরে। করলা কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, বেগুন ১২০ থেকে ২০০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পটোল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঝিঙা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ও শিম ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শীতের আগাম সবজি বাজারে এলেও দাম রীতিমতো আকাশছোঁয়া। ছোট একটি ফুলকপি ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শিম ২০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খেত নষ্ট হয়েছে, যার ফলে সরবরাহ কমে গেছে। পাশাপাশি দুর্গাপূজার ছুটিতে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি বন্ধ থাকায় এর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।

ক্রেতাদের অভিযোগ, সবজির তেমন ঘাটতি নেই, কিন্তু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

রাজধানীর রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘করলার কেজি ১৬০ টাকা! আগে মাছ-মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি, এখন সবজি কিনতেও হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে।’

সবজির পাশাপাশি ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেল এখন লিটারে ১৭২ থেকে ১৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৬ টাকা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ সংকট দেখিয়ে কোম্পানিগুলো কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াচ্ছে।

অন্যদিকে মাছ ও মুরগির দামও ক্রেতাদের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। মাঝারি রুই ও কাতল ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২১০০ থেকে ২৩০০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

খোলা আটা, দেশি ডাল ও মসলার দামও কমেনি। আটা কেজিতে ৫০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, দেশি রসুন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সব মিলিয়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার বাজারে কঠোর নজরদারি না বাড়ালে সামনে আরও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।