9:38 pm, Saturday, 8 November 2025

মধ্যরাতে রাবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও, পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম ‘স্থগিত’

  • Reporter Name
  • Update Time : 06:02:53 am, Sunday, 21 September 2025
  • 73 Time View

বিশ্বাসের প্রিধ্বনি নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পূণর্বহালের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দিনভর অনশন, ধস্তাধস্তি আর উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রাখার পর মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা একযোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জুবেরী ভবনে আসেন। পরে সেখান থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে আগামীকাল রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহবান করা হয়েছে। রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। তবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, উপাচার্য নিজ মুখে এসে তাদের সামনে বাতিলের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা আর ভিক্ষা, একসাথে চলে না’, ‘অন টু থ্রি ফোর, পোষ্য কোটা নো মোর’, ‘রক্ত লাগলে রক্ত নিন, পোষ্য কোটা বাদ দিন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সুপ্রভা বিনতে রফিক বলেন, ‘আমরা ১৪ জুলাইয়ের মতোই আজ আবার রাজপথে নেমেছি। পোষ্য কোটার চূড়ান্ত বিলুপ্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।’

দিনভর উত্তেজনা ও হাতাহাতি

এর আগে দুপুর আড়াইটা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন এবং উপ-উপাচার্যের গাড়িতে টাকা ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ জানান।

বিক্ষোভকারীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাইন উদ্দিনের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিলে তিনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে তিনি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানকে নিয়ে জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেন। এসময় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন। বিকেল সোয়া ৪টা থেকে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে জুবেরী ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব মুঠোফোনে বলেন, ‘আগে আমি আমার প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টরকে ফেরত চাই, তারপরই আলোচনায় বসব। আমরা এখন পর্যন্ত অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে জিম্মি করে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আজকে তারা যা করেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন হবে কিনা, তা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে খুবই আন্তরিক।’

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

বন্যপ্রাণী ও বন রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক নিবন্ধন শুরু করল বন অধিদপ্তর

মধ্যরাতে রাবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও, পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম ‘স্থগিত’

Update Time : 06:02:53 am, Sunday, 21 September 2025

বিশ্বাসের প্রিধ্বনি নিউজ ডেস্কঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পূণর্বহালের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দিনভর অনশন, ধস্তাধস্তি আর উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ রাখার পর মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা একযোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জুবেরী ভবনে আসেন। পরে সেখান থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে আগামীকাল রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহবান করা হয়েছে। রাত ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। তবে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, উপাচার্য নিজ মুখে এসে তাদের সামনে বাতিলের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা আর ভিক্ষা, একসাথে চলে না’, ‘অন টু থ্রি ফোর, পোষ্য কোটা নো মোর’, ‘রক্ত লাগলে রক্ত নিন, পোষ্য কোটা বাদ দিন’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সুপ্রভা বিনতে রফিক বলেন, ‘আমরা ১৪ জুলাইয়ের মতোই আজ আবার রাজপথে নেমেছি। পোষ্য কোটার চূড়ান্ত বিলুপ্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।’

দিনভর উত্তেজনা ও হাতাহাতি

এর আগে দুপুর আড়াইটা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন এবং উপ-উপাচার্যের গাড়িতে টাকা ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ জানান।

বিক্ষোভকারীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাইন উদ্দিনের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিলে তিনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে তিনি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানকে নিয়ে জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেন। এসময় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন। বিকেল সোয়া ৪টা থেকে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে জুবেরী ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব মুঠোফোনে বলেন, ‘আগে আমি আমার প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টরকে ফেরত চাই, তারপরই আলোচনায় বসব। আমরা এখন পর্যন্ত অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে জিম্মি করে কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আজকে তারা যা করেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন হবে কিনা, তা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে খুবই আন্তরিক।’