2:11 pm, Thursday, 11 September 2025

রিসোর্ট থেকে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা গ্রেপ্তার

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:36:05 am, Sunday, 7 September 2025
  • 16 Time View

নিউজ ডেস্কঃ চেক জালিয়াতির মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নবাবগঞ্জে অবস্থিত তার নিজ রিসোর্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তারের পর শামসুদ্দোহাকে আদালতে তোলা হয়েছে।

পুলিশের সাবেক এই অতিরিক্ত আইজিপি পুলিশ বাহিনীতে দুর্নীতির ‘বরপুত্র’ হিসেবে কুখ্যাত ছিলেন। অবৈধ অর্থ উপার্জনে তার জুড়ি মেলা ভার। বিশেষ করে প্রেষণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

বিভিন্ন নদী খনন কাজের টেন্ডার থেকে কমিশন হিসেবে নেন শত শত কোটি টাকা। এছাড়া, নদী দখল করে গড়ে তোলা শিল্পকারখানার মালিকদের কাছ থেকেও বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। এসব অবৈধ আয় দিয়ে তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জে শত বিঘারও বেশি জমির উপর খামারবাড়ি গড়ে তোলেন, যেখানে বিনিয়োগ করা হয়েছে কয়েকশ’ কোটি টাকা।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে শামসুদ্দোহা ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অভিযোগপত্রে ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদ গোপন ও অবৈধভাবে অর্জনের কথা উল্লেখ রয়েছে।

গত বছরের জুলাই মাসে দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।

দুদকের সূত্রে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি অসাধু উপায়ে বিপুল অর্থ আয় করেন। এই অর্থ বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের হিসাবে সন্দেহজনক উৎস থেকে আসা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে জমা করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় তিনি ২১ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা রেখে পরবর্তীতে তা উঠিয়ে তার উৎস ও মালিকানা গোপন করার চেষ্টা করেন।

এছাড়াও, দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন এবং মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে তার আরও ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক আইন, ২০০৪ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

একইভাবে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদ গোপন এবং ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার অজ্ঞাতআয়ের সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

রিসোর্ট থেকে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা গ্রেপ্তার

Update Time : 11:36:05 am, Sunday, 7 September 2025

নিউজ ডেস্কঃ চেক জালিয়াতির মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নবাবগঞ্জে অবস্থিত তার নিজ রিসোর্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তারের পর শামসুদ্দোহাকে আদালতে তোলা হয়েছে।

পুলিশের সাবেক এই অতিরিক্ত আইজিপি পুলিশ বাহিনীতে দুর্নীতির ‘বরপুত্র’ হিসেবে কুখ্যাত ছিলেন। অবৈধ অর্থ উপার্জনে তার জুড়ি মেলা ভার। বিশেষ করে প্রেষণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

বিভিন্ন নদী খনন কাজের টেন্ডার থেকে কমিশন হিসেবে নেন শত শত কোটি টাকা। এছাড়া, নদী দখল করে গড়ে তোলা শিল্পকারখানার মালিকদের কাছ থেকেও বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। এসব অবৈধ আয় দিয়ে তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জে শত বিঘারও বেশি জমির উপর খামারবাড়ি গড়ে তোলেন, যেখানে বিনিয়োগ করা হয়েছে কয়েকশ’ কোটি টাকা।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে শামসুদ্দোহা ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। অভিযোগপত্রে ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদ গোপন ও অবৈধভাবে অর্জনের কথা উল্লেখ রয়েছে।

গত বছরের জুলাই মাসে দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।

দুদকের সূত্রে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি অসাধু উপায়ে বিপুল অর্থ আয় করেন। এই অর্থ বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের হিসাবে সন্দেহজনক উৎস থেকে আসা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে জমা করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় তিনি ২১ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা রেখে পরবর্তীতে তা উঠিয়ে তার উৎস ও মালিকানা গোপন করার চেষ্টা করেন।

এছাড়াও, দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন এবং মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন। দুদকের অনুসন্ধানে তার আরও ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ মিলেছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক আইন, ২০০৪ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

একইভাবে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদ গোপন এবং ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার অজ্ঞাতআয়ের সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।