2:10 pm, Thursday, 11 September 2025

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ফের ভেসে এলো ১০ ফুট লম্বা মৃত ডলফিন

দুমকী, পটুয়াখালী প্রতিনিধঃ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা সৈকতে ফের ১০ ফুট লম্বা একটি ইরবতি ডলফিন ভেসে এসেছে। এটির পুরো মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে চামড়া ওঠানো। মাথা ও শরীরে ক্ষত রয়েছে।

৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুয়াকাটা সৈকতের চর-গঙ্গমতি এলাকায় এটিকে দেখতে পান সকল উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটা (উপরা) এর সদস্যরা। পরে বন বিভাগ এবং কুয়াকাটা পৌরসভা সমন্বয় করে ডলফিনটিকে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট সৈকতের মিড়াবাড়ি ব্লক পয়েন্ট এলাকায় আরও দুটি দুই প্রজাতির ডলফিন ভেসে এসেছিল।
উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটা (উপরা) এর আহ্বায়ক আবুল হোসেন রাজু জানান, আমাদের একটি টিম আজকে বন পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে এটিকে জঙ্গলে ভিতরে দেখতে পাই। দেখে মনে হচ্ছে এটি সকালের জোয়ারে এসেছে। ইরাবতী প্রজাতির এ ডলফিন যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বঙ্গোপসাগর সমুদ্র উপকূলের নিকটে নদীর মোহনাতে বিভিন্নভাবে দেখা যায়।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, এখানে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো ডলফিনের বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক। তাদের সহযোগিতায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৯টি, ২৪ সালে ১০টি ও এর আগে ২৩ সালে ১৫টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছিল কুয়াকাটাসহ অত্র এলাকায়। উপকূলীয় এলাকাজুড়ে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি ডলফিন নিয়ে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে এ মৃত্যুর সঠিক কারণগুলো বের করা হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজিব সরকার বলেন, ‘ইরাবতি ডলফিন সাধারণত উপকূলীয়, লবণাক্ত ও স্বাদু পানির মিশ্রণযুক্ত পরিবেশে, যেমন নদী মোহনা, ব-দ্বীপ অঞ্চল এবং ম্যানগ্রোভ চ্যানেলে বাস করে। ডলফিন মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম মাছ ধরার জালে আটকা পড়া। জেলেরা যখন ইলিশ বা অন্যান্য মাছ ধরার জন্য বড় গিলনেট বা ট্রলিং নেট ব্যবহার করে, তখন অসাবধানতাবশত ডলফিন তাতে আটকা পড়ে।

ডলফিন স্তন্যপায়ী প্রাণী, তাই পানির নিচে শ্বাস নিতে পারে না। জালে আটকা পড়লে তারা পানির ওপরে উঠে শ্বাস নিতে ব্যর্থ হয় এবং দমবন্ধ হয়ে মারা যায়। নৌযান বা ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগেও অনেক ডলফিনের মৃত্যু হয়। ডলফিন মারা যাওয়া সমুদ্রের পরিবেশের জন্য একটি খারাপ লক্ষণ। কারণ, ডলফিনকে সমুদ্রের স্বাস্থ্যকর বাস্তুতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়।

বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান জানান, ‘আমি ডলফিন রক্ষা কমিটির মাধ্যমে শুনেছি। আমাদের সদস্যদের পাঠিয়ে দ্রুত মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ফের ভেসে এলো ১০ ফুট লম্বা মৃত ডলফিন

Update Time : 12:24:58 am, Tuesday, 9 September 2025

দুমকী, পটুয়াখালী প্রতিনিধঃ পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা সৈকতে ফের ১০ ফুট লম্বা একটি ইরবতি ডলফিন ভেসে এসেছে। এটির পুরো মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে চামড়া ওঠানো। মাথা ও শরীরে ক্ষত রয়েছে।

৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুয়াকাটা সৈকতের চর-গঙ্গমতি এলাকায় এটিকে দেখতে পান সকল উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটা (উপরা) এর সদস্যরা। পরে বন বিভাগ এবং কুয়াকাটা পৌরসভা সমন্বয় করে ডলফিনটিকে মাটিচাপা দিয়ে রাখেন।

এর আগে গত ৩১ আগস্ট সৈকতের মিড়াবাড়ি ব্লক পয়েন্ট এলাকায় আরও দুটি দুই প্রজাতির ডলফিন ভেসে এসেছিল।
উপকূল পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন, কুয়াকাটা (উপরা) এর আহ্বায়ক আবুল হোসেন রাজু জানান, আমাদের একটি টিম আজকে বন পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে এটিকে জঙ্গলে ভিতরে দেখতে পাই। দেখে মনে হচ্ছে এটি সকালের জোয়ারে এসেছে। ইরাবতী প্রজাতির এ ডলফিন যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও বঙ্গোপসাগর সমুদ্র উপকূলের নিকটে নদীর মোহনাতে বিভিন্নভাবে দেখা যায়।

কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, এখানে পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠনগুলো ডলফিনের বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক। তাদের সহযোগিতায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৯টি, ২৪ সালে ১০টি ও এর আগে ২৩ সালে ১৫টি মৃত ডলফিন ভেসে এসেছিল কুয়াকাটাসহ অত্র এলাকায়। উপকূলীয় এলাকাজুড়ে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি ডলফিন নিয়ে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে এ মৃত্যুর সঠিক কারণগুলো বের করা হয়।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজিব সরকার বলেন, ‘ইরাবতি ডলফিন সাধারণত উপকূলীয়, লবণাক্ত ও স্বাদু পানির মিশ্রণযুক্ত পরিবেশে, যেমন নদী মোহনা, ব-দ্বীপ অঞ্চল এবং ম্যানগ্রোভ চ্যানেলে বাস করে। ডলফিন মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম মাছ ধরার জালে আটকা পড়া। জেলেরা যখন ইলিশ বা অন্যান্য মাছ ধরার জন্য বড় গিলনেট বা ট্রলিং নেট ব্যবহার করে, তখন অসাবধানতাবশত ডলফিন তাতে আটকা পড়ে।

ডলফিন স্তন্যপায়ী প্রাণী, তাই পানির নিচে শ্বাস নিতে পারে না। জালে আটকা পড়লে তারা পানির ওপরে উঠে শ্বাস নিতে ব্যর্থ হয় এবং দমবন্ধ হয়ে মারা যায়। নৌযান বা ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগেও অনেক ডলফিনের মৃত্যু হয়। ডলফিন মারা যাওয়া সমুদ্রের পরিবেশের জন্য একটি খারাপ লক্ষণ। কারণ, ডলফিনকে সমুদ্রের স্বাস্থ্যকর বাস্তুতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়।

বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম মনিরুজ্জামান জানান, ‘আমি ডলফিন রক্ষা কমিটির মাধ্যমে শুনেছি। আমাদের সদস্যদের পাঠিয়ে দ্রুত মাটিচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায়।